বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন ফার্মেসী আইন ২০১৩ (বিশেষ বিধান) এর (ফার্মেসী অধ্যাদেশ ১৯৭৬) ধারা ৪(২) ক্ষমতাবলে প্রতিষ্ঠিত ফার্মেসী শিক্ষা ও ফার্মেসী পেশার একমাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা (Regulatory Body)। ১৯৭৬ সালে ফার্মেসী অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে ফার্মেসিকে একটি পেশাগত বিষয় এবং ফার্মাসিস্টদেরকে পেশাজীবি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। বর্তমানে ১৩ টি সরকারি ও ২৮ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ফার্মেসী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিল এক্রিডিটেশন প্রদান করেছে এবং এ সকল বিশ্ববিদ্যালয় হতে ¯œাতক সম্পন্ন করার পর ফার্মেসী কাউন্সিল পাশকৃত শিক্ষার্থীদের ‘এ’ক্যাটাগরিতে রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করে থাকে। একইভাবে ১০ টি সরকারি হেল্থ ইনষ্টিটিউট ও ২৮ টি বেসরকারি হেল্থ ইনষ্টিটিউটে ডিপ্লোমা-ইন-ফার্মেসী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিল এক্রিডিটেশন প্রদান করেছে এবং এ সকল হেল্থ ইনষ্টিটিউট হতে ডিপ্লোমা-ইন-ফার্মেসী র্কোস সম্পন্ন করার পর ফার্মেসী কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি জেলায় ভিত্তিক ফার্মেসী সার্টিফিকেট রেজিষ্ট্রেশন কোর্স পরিচালনা করে থাকে। উক্ত কোর্সে ভর্তিকৃত প্রশিক্ষনার্থী ফার্মেসী সার্টিফিকেট র্কোস সম্পন্ন করার পর ফার্মেসী সার্টিফিকেট রেজিষ্ট্রেশন পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হলে ফার্মেসী কাউন্সিল তাঁদের ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করে থাকে এবং ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত ব্যক্তি ঔষুধের দোকানে (ফার্মেসিতে) কাজ করার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। স্বাস্থ্যসেবায় ডাক্তার ও নার্সের ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনিভাবে ওষুধের সংরক্ষণ, গুণগতমান, সঠিক ওষুধ নির্বাচন ও ওষুধের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য স্বাস্থ্য সেবায় ফার্মাসিস্টের ভূমিকাও অপরিহার্য। ফার্মাসিস্টরা নিজেদের পেশাগত দক্ষতা দিয়ে ওষুধ শিল্পে (উৎপাদন, মাননিয়ন্ত্রণ, মানের নিশ্চয়তা বিধান, গবেষণা ও উন্নয়ন, বিপণন, উৎপাদন পরিকল্পনা, ডিসপেন্সিং, রেগুলেটরী এফেয়ারস, বিজনেজ ডেভেলপমেন্ট ও রপ্তানি), সরকারি সংস্থায়, বেসরকারী হাসপাতালে, কমিউনিটি ফার্মেসিতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ওষুধ শিল্পের বিকাশে এক আমূল পরিবর্তন। মডেল ফার্মেসী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় একটি অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে ফার্মাসিস্টদের প্রশিক্ষিত ও যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে ঔষধের নিরাপদ ও যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করছে। বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের একমাত্র লক্ষ্য ফার্মেসী শিক্ষা ও ফার্মেসী পেশার মান নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে যুগোপযোগী করে তোলা। বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিল নিম্নলিখিত কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ফার্মেসী শিক্ষা ও ফার্মেসী পেশাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেঃ
(ক) এই আইনের অধীন ফার্মাসিস্ট হিসেবে নিবন্ধন সনদ প্রদান সংক্রান্ত পরীক্ষা অনুমোদন;
(খ) কোন কোন বিষয়সমূহ অনুমোদিত পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হইবে তাহা নির্ধারণ;
(গ) অনুমোদিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের উদ্দেশ্যে প্রণীত ফার্মেসী-পাঠ্যসূচী এবং ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ অনুমোদন করা;
(ঘ) অনুমোদিত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর ভর্তির শর্তাবলী এবং ভর্তি পদ্ধতি নির্ধারণ;
(ঙ) অনুমোদিত ফার্মেসী-শিক্ষা প্রদানকারী শিক্ষকবৃন্দের মান এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নির্ধারণ;
(চ) ফার্মেসী-শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠনের কাঠামোগত সুবিধাদি এবং শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির মান নির্ধারণ;
(ছ) ফার্মাসিস্ট হিসাবে নিবন্ধনভুক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডিগ্রী অথবা ডিপ্লোমার স্বীকৃতি প্রদান;
(জ) ফার্মেসী বিষয়ে যে কোন কোর্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিদর্শন;
(ঝ) ফার্মাসিস্ট ও শিক্ষানবীশ ফার্মাসিস্টদের রেজিষ্টার প্রণয়ন ও সংরক্ষণ;
(ঞ) ফার্মাসিস্টদের নিবন্ধন করা এবং নিবন্ধন সনদপত্র প্রদান;
(ট) ফার্মাসিস্ট হিসাবে নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা গ্রহণ, পরীক্ষার্থীর যোগ্যতা নির্ধারন, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় নির্ধারণ;
(ঠ) উপরি-উক্ত কার্যাবলী এবং এই আইনের অধীন অন্যান্য বিধানের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদন ।